ছোটবেলায়
অনেকে জিজ্ঞেস করত বড় হয়ে কী হতে চাও?
এই প্রশ্নের উত্তর হিসেবে জেনে এসেছি বলতে হয় ডাক্তার,
ইঞ্জিনিয়ার-এমনকি পাইলট, সিনেমার নায়ক পর্যন্ত চলে। এসব উত্তর-ই দিয়ে আসতাম বরাবর
এই প্রশ্নের জবাবে। মনের ভেতরে আসলে কী ইচ্ছে ছিল কখনো ভেবে দেখিনি। আজ বড়বেলায়
এসে মনে হয়-ছোটবেলা তো কেটেছে বই পড়ে আর সেই চরিত্রগুলোর কথা ভেবে। একা একা বাসায় বসে বই পড়ে অনেক অনেক
সময় কাটিয়েছি। ছেলেবেলার সেই দিনগুলিতে ইন্টারনেট, ফেসবুক, স্মার্ট ফোন ছাড়াই বই পড়ে
পার করেছি ঘন্টার পর ঘন্টা।
বই এর জগতে অনেক খানি জায়গা জুড়ে ছিলেন সত্যজিত। প্রফেসর
শংকু এই তিব্বতে উঠে যাচ্ছেন, মরুভুমি পাড়ি দিয়ে আবিষ্কার করছেন এক দৈত্যাকার নাক,
অদ্ভুত এক স্বপ্নে দেখা দ্বীপে ঘুরে বেড়াচ্ছে আজগুবি জন্তুর দল। ফেলুদাকেও ভাল লাগত
কিন্তু মনে হত ওভারস্মার্ট, বাছাই বারো, আবারো বারো এরকম ছোট গল্পের সংকলন গুলো ছিল
সেরা। আর ছিল সত্যজিতের ছবি বানাবার গল্প-গুপি গাইন বাঘা বাইন কিভাবে লাফ দিল আর সেটা
উলটো করে চালিয়ে দিলেই হয়ে গেল উড়ে যাবার দৃশ্য। এই ওরা এখানে-তো হাত তালি দিলেই আবার
ওখানে। কম্পিউটার গ্রাফিক্স ছাড়া ক্যামেরার কাজে কিভাবে দেখান হচ্ছে একই মানুষ দুই
চরিত্রে কথা বলে যাচ্ছে-এসব পড়ে মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেত ইশ একদিন যদি একটা সিনেমা বানাতে
পারতাম! বই পড়তে গেলে ভেতরে ছবি গুলো দেখে ভাবতাম আহ-যদি এমন ছবি আঁকতে পারতাম। মুখে
পাইপ নেয়া সত্যজিতের ছবি দেখে ভাবতাম হায়রে একটা পাইপ যদি থাকত মুখে দিয়ে ছবি তুলতাম!
বড়বেলায়
এসে ছোটবেলায় কি হতে চাইতাম ইচ্ছেটা পরিষ্কার। ছেলেবেলায় চেয়েছিলাম বড় হয়ে সত্যজিত
রায় হতে!