বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

মেলায় ছোটদের বই

প্রতি মেলায় ইচ্ছা থাকে ছোটদের বই নিয়ে এক্সপেরিমেন্টাল কিছু করার। কিন্তু করতে যেয়ে দেখি শেষ মেষ খুব একটা নতুন ধরনের কাজ করার সাহস করে উঠতে পারি না, বা পারলেও নিজের পছন্দসই হয়না। এবার মেলায় দুটো ছোটদের পিকচার বই এর কাজ করেছিলাম। একটা এসেছে শৈশব প্রকাশনী থেকে- শারমিন শামসের টুলটুল আর ম্যাও ছানাদের গপ্পো। আর দ্বিতীয়টা খুবই স্পেশাল-কারন এটা লিখেছেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং বই এসেছে তাম্রলিপি প্রকাশনী থেকে।

এবার এক্সপেরিমেন্ট করতে চেয়েছিলাম পার্সপেক্টিভ এবং কালার ভ্যারিয়েশান নিয়ে। ডিসটর্টেড পার্স্পেকটিভ এর আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে যেয়ে লেজে গোবরে। আর কালার ভ্যারিয়েশনে চেষ্টা করেছিলাম ডিজিটালেই কালার ডায়নামিক্স সহ ব্রাশ ব্যবহার করে একটু স্মাজি কালারের ভাব আনার। সেটাও কিছু জায়গায় বেশি বেশি হয়ে যেয়ে মেখে গেছে কিছুটা। তবে বই এর প্রিন্ট খারাপ আসেনি কোনটার এটাই শান্তনা!

কিছু ছবি ব্লগে দিয়ে রাখি।









নীলকমল-লালকমল

ঢাকা কমিক্স থেকে বইমেলার জন্য করা এবারের কমিক। দক্ষিণারঞ্জন এর ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নেওয়া নীল কমল লাল কমল এর রূপকথার ছায়া অবলম্বনেই কমিক টা করা বলা যায়। এই প্রজেক্টের শুরু সম্ভবত গত বইমেলার (২০১৮) এর পর পরই। মেহেদি ভাই বললেন আগামী মেলাতে একটা বিশাল পরিকল্পনা। ঠাকুর মার ঝুলি এর গল্প গুলির কমিক ভার্সন করা হবে ঢাকা কমিক থেকে। ছয় আর্টিস্ট ছয় গল্প থেকে কমিক করবে। একসাথে বিরাট একটা সংকলন। ছোটদের জন্য একদম জমজমাট আকর্ষন।

প্রজেক্ট এর প্রাথমিক উত্তেজনা কেটে কাজ শুরু করতে করতে দেখা গেল বছরের শেষ দিক চলে আসছে। মেহেদি ভাই বললেন কমিকের কাজ শুরু করতে পারবা? আমি বলি মেহেদি ভাই এই তো আর একটা কমিক শেষ করতেছি-শেষ করেই ধরব। মেহেদি ভাই কয়দিন পর আবার বলেন রূপকথা কমিকের কাজ ধরতে পারবা-আমি বলি এইতো মেহেদি ভাই, স্ক্রিপ্ট লিখতেছি। লিখেই ধরব। ভাই আবার কিছুদিন পর বলেন-কাজ কী ধরতে পারবা? আমি বলি ভাই আমি তো বিয়ের মার্কেটিং এ-শেষ করেই ধরতেছি।

এই গড়ি মসি করতে করতে নীলকমল লালকমলের কাজ ধরা হল প্রায় ডিসেম্বরে। আর রঙ করে ফাইনালি সব শেষ করে জমা দিলাম ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখে। শেষ দিকের প্রায় ১০ পেজে ফ্ল্যাট কালার করে সাহায্য করেছে রোমেল। দারুন প্রিন্টে ঝক ঝকে কমিক বই ঢাকা কমিক্সে চলে আসল মেলার দ্বিতীয় সপ্তাহেই।

ঠাকুরমার ঝুলি এর আক্ষরিক কমিক রূপান্তর আমার পশ্চিমা কমিকের স্টোরিটেলিং আইডিয়ায় হয়ত করতে পারিনি। চেষ্টা করেছি নিজের মত করে গল্পটা বেশ পরিবর্তন করেই বলতে। মূল ভাবনা, চরিত্র এবং গল্পের ক্রম ঠিক রেখে সংলাপ, ক্যারেক্টার বিল্ডিং এবং রূপকথার রাজ্যের বর্তমান সময়ের ক্যারেক্টারাইজেশনে নিজের স্বাধীনতা মত বলা যায় যাচ্ছেতাই ই করেছি। মেহেদি ভাই টুকটাক এডিট করা ছাড়া আমাকে আমার মতই লিখতে আঁকতে কোন বাধা দেন নাই!

এই সিরিজের অন্যান্য বই গুলোর কাজ অনেক খানি আগানোর পরেও নানা জটিলতায় এবার মেলায় আসেনি। তবে আশা করি সামনের মেলায় রূপকথা সিরিজের আরো বই আসবে।

কেমন লাগল পাঠকের কে জানে-রূপকথার পাঠকদের সাথে যোগাযোগ এখন আর নেই।


মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

নিজের কমিক-০৫

অনেক ঝক্কি ঝামেলা শেষে অবশেষে তুফান কমিক এখন বাজারে!  এর মধ্যে নানান কিছুর ভেতর দিয়ে যেতে যেতে ব্লগে কোন আপডেট দেওয়া হয়নি। কমিকের পুরো গল্প একবারে করার প্ল্যান থাকলেও শেষ মেষ সময়  স্বল্পতায় দুই ভাগে করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ৬২ পেজ করে মোট ১২৪ পেজে দুই খন্ডে গল্প শেষ করার পরিকল্পনা এখন। প্রথম ৬২ পেজের কাজ সময় মত শেষ করে মেলার প্রথম দিন থেকেই পাঞ্জেরী স্টলে পাওয়া যাচ্ছে তুফান-০১!

গ্রাফিক নভেলের এই কাজে অনেকের কাছে অনেক রকম হেল্প পেয়েছি। কমিকে ফ্ল্যাট কালারে কাজ করেছে মারুফ হাসান, ফাহাদ রহমান, রেহনুমা প্রসূন, রাকিব রাজ্জাক এবং রোমেল বড়ুয়া। কমিকের এডিটিং, টাইটেল ডিজাইন, প্রিন্টিং সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছেন পাঞ্জেরী এর নিলয়দা। কমিকের প্রিন্ট দেখে মন ভাল হয়ে গেছে! কমিকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাথে ছিলেন শাহরিয়ার ভাই- কমিকের টাইটেল ও শাহরিয়ার ভাইএর দেয়া। আর সেই সাথে বিভিন্ন সময়ের স্ক্রিপ্ট পড়ে ফিডব্যাক জানিয়েছেন আরো অনেকে! সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।


নিজের স্টাইলে নিজের গল্পে গ্রাফিক নভেল করলাম প্রথম! জানিনা কেমন লাগবে সবার-আমি কাজটা করে বেশ মজা পেয়েছি। আর্ট স্টাইল, স্ক্রিপ্টিং দুই ক্ষেত্রেই অনেক এক্সপেরিমেন্ট আছে, অনেক ভাবনা চিন্তা ছিল-সব কিছু ঠিক ঠাক আনতে পেরেছি কিনা জানিনা। অচিরেই দ্বিতীয় পর্বের কাজে হাত দিব। কমিকটা পড়ে ফিডব্যাক জানালে খুব খুশি হব!