রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১

আমার সিংগাড়া খেতে ভাল লাগে না

 ইদানিং সিংগাড়া খেতে আর ভাল লাগে না। আগে মনে আছে সিংগাড়া অনেক মজা করে খেতাম। ফকিরাপুলের কাছের অফিসের নিচের দোকানে খাওয়া সিংগাড়ার কথা অনেক মনে পড়ে। অফিস কাজের ফাকে ১১-১২ টার দিকে এনাম ভাইকে নিয়ে টুক করে বসের চোখ এড়িয়ে নিচে চলে যেতাম। অফিসপাড়ার গরম থাকত দোকানটায়-শেয়ার, লোন, টাকা, কড়ির আলোচনার মধ্যে সাদা প্লেটে বড় বড় কাটা পেয়াজ সহ চলে আসত সিংগাড়া।  ভেতরে বাদাম থাকত, নাকি থাকত না-আলুর সাথে কি মাখিয়ে যে সিংগাড়া গুলো তৈরী হত জানি না। ফু দিয়ে টকে ডুবিয়ে সেই সিংগাড়া খাওয়া হয়নি অনেক দিন। এখন খেতে গেলে এসিডিটি, গ্যাসট্রিক এসবের চিন্তা সেই স্বাদকে আটকে দিতে চায় মনে হয়। সিংগাড়া এখন খেতে গেলে খোলস টা মোটা মনে হয়-নিচের কোনার দিকের অংশ গুলো ভেঙ্গে রেখে দেই। কারন ওখানে খাবার মত কিছু নেই-শুধু পেয়াজ কাচা মরিচ আর টক দিয়ে একসময় ঐ মুড়োন খোলস গুলো ও খেয়ে ফেলতাম।

তবে এখন সমুচা ভাল লাগে। তিনকোনা পাতলা পরতের সমুচা-এর সাথে পেয়াজ চলেনা। তেতুলের টক হলেও সই, না হলেও ক্ষতি নেই। ভেতরে ক্যারামেলাইজড পেয়াজ, ঝালের বাড়াবাড়ি নেই, আলুর বাড়তি নেই। তিন কামড়ে একটা শেষ-ছোট ও হতে পারে, এক বারেই মুখে চলে যাচ্ছে। প্রথম কামড়ের পর টকে ডুবিয়ে অন্য রকম একটা দ্বিতীয় কামড়। স্কুলের কথা মনে পড়ে যায় সমুচায়-টিফিন টাইমে ফ্রেন্ডস কর্নার, ছুটির দিনে হার্ট ওয়ার্ল্ড-তেতুল বিচি ভাসা বাদামি রঙ এর টক-টিনের প্লেটে সমুচা। ২ টাকা পিস হয়ত।

এখন তাই সমুচা খাই। সিংগাড়ার স্বাদ নিতে ভুলে যাচ্ছি-সমুচার প্রেম আবার ফেরত আসছে। ৩০ এর দশক টাই নাকি এমন-স্কুল ফ্রেন্ডরা আবার অনেক আপন হয়ে যায়। নস্টালজিয়া ফেরত আসতে থাকে- স্মৃতির কুয়াশা ঘেরা অলি গলি হাতড়ে বেড়াতে মন চায়। অনেক অনেক দূরে চলে যাবার আগে মেমোরি গুলোকে আর একবার ঝালিয়ে নিয়ে সময়গুলো বয়ে যেতে দেখা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন