ইন্ডিয়া একবার ঘুরে আসার পর ভিসার মেয়াদ থাকতে থাকতে ভাবলাম আর একবার ঘুরে আসা যায়। এবারে ঘুরার প্ল্যান ছিল মা কে সাথে নিয়ে কোলকাতা আর দার্জিলিং। ৭ দিনের ট্যুরে ধীরে সুস্থে ঘুরে আসলাম মেঘে ঢাকা দার্জিলিং আর চড়া রোদের কোলকাতা। এবার স্কেচবুক নিয়ে ল্যান্ডস্কেপ স্টাডি করার একটা আইডিয়া নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেগুলো নিয়ে কিছু লিখে রাখি ব্লগে।
দার্জিলিং ভ্রমন এখানেই শেষ। বেশ ভাল লাগল ঘুরে এখানে। ট্যুরিস্টের চোখ দিয়ে দেখে সব হাসি খুশি লাগলেও লাইফ এখানে নিশ্চয় অনেক কষ্টের। সারা বছর হিম হিম শীত, ৪০ কিলো পাহাড়ি পথে প্রতিদিন উঠা নামা, রিফিউজি সেন্টারে আটকে পড়া মানুষ জন, ১২ মাস ট্যুরিজমের ভিড়, পাহাড়ের নানা রকম জটিলতা-ইত্যাদির মধ্যেও মানুষ জনের হাসি মাখা ব্যবহার ভাল লাগল।
শেষে আবার কোলকাতায় ব্যাক। কোলকাতা ঘুরতে গেলে খালি অঞ্জন দত্ত এর গুলো মনে পড়ে যায়-ধর্মতলার মোড়, ৩৬ চৌরংগী লেন, রডন স্ট্রিটের কালি ঝুলি মাখা বাড়ি। এমন কিছু গান যদি আমাদের থাকত। ( আছে কয় একটা অবশ্য-টিকাটুলি বাড্ডায় অলিগলি আড্ডায়)
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখতে যেয়ে আঁকা। ব্যাকগ্রাউন্ড এলিমেন্টে ফোকাস করতে চেষ্টা করেছি এখানে।
ব্যাকগ্রাউন্ড আকতে গেলে যেই সমস্যা টা হয় আমার ক্যানভাস সাইজটা অনুযায়ী ধরতে পারি না অনেক সময়। যেমন হয়ত একটা বিল্ডিং দেখে আঁকতে শুরু করলাম-কিন্তু কোথায় শেষ করব-বা কত গুলি এলিমেন্ট নিয়ে কম্পোজিশন করব সেটা ঠিক রাখতে পারি না। ফলে স্কেল বা পার্সপেকটিভ স্কেচে ঠিক মত ধরতে পারি না। এই জিনিসটা ঠিক করার জন্য এখন থেকে প্র্যাকটিস করছি একটা বক্স বা ফ্রেম একে নিয়ে ছোট স্কেলে ব্যাপার টা ধরার। আস্তে আস্তে বড় ফ্রেমে যাবার আগে এটা কাজে দিচ্ছে।
নিউ জলপাইগুড়ি যাবার জন্য শিয়ালদহ স্টেশনে-পদাতিক এক্সপ্রেসের অপেক্ষায়।
দার্জিলিং পৌঁছে প্রথম দিন-যাবার পথটা ছিল দারুন-মেঘের উপরে খাড়া পাহাড়ি রাস্তা, একটু পর পর ইউ টার্ন, উনিশ বিশ হলেই পাশে খাদ-প্রায় ৪০ কিলো পাহাড়ি রাস্তার পর কার্শিয়াং, ঘুম পার হয়ে দার্জিলিং। মেঘ কুয়াশায় মাখা একটা শহর। উচু নিচু রাস্তা ঘাট, সাজানো পাহাড়ি বাসা, ছোট ছোট বাগান, খুপরি খুপরি রেস্টুরেন্ট-আর মার্চের তাতানো গরমের ভেতর হিম হিম ঠান্ডা আবহাওয়া। সব মিলিয়ে দারুন একটা ব্যাপার। বিকাল বেলা হাটা হাটি আর বিখ্যাত দার্জিলিং টি।
বক্স কেটে কেটে ল্যান্ডস্কেপ আর এনভায়রনমেন্ট স্টাডি। স্টাডি গুলো থেকে আমার যা মনে হল সেগুলো নোট রাখি-
১। পাহাড়ি এলাকায় ল্যান্ডস্কেপ্ট বা এনভায়রনমেন্ট স্টাডিতে দূরত্ব বোঝা সহজ। সমতলে আমরা সাধারনত সব কিছু দেখি ওয়ান পয়েন্ট পার্সপেক্টিভে। সেখানে ফোরগ্রাউন্ডের সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড এত ওভারল্যাপড থাকে যে আলাদা করে তাদের স্কেল টা বুঝা যায় না। উপর থেকে দেখলে পার্সপেক্টিভের আরো রুলগুলা যেমন দূরে গেলে আস্তে আস্তে স্কেল ছোট হওয়া, ভ্যালু কমে যাওয়া এগুলো বুঝা যায়।
২। দার্জিলিং এ আকতে যেয়ে যেটা দেখলাম ওয়ান পয়েন্ট পার্সপেক্টিভ এর জায়গা নেই বললেই চলে। একটু পর পর পাহাড়ি রাস্তা গুলো বাঁক নেয়, নিচের দিকে নেমে যায়-উচু নিচু হয়ে ইউ টার্ন নেয়-সব মিলিয়ে এত রকম ডিস্টরশন আসে যেগুলা স্কেচে মজার দেখায়।
৩। কুয়াশা ঘেরা এলাকায় ভ্যালু ডিফারেন্স দারুন ভাবে দুরত্ব বুঝায়। দার্জিলিং এ যে কদিন ছিলাম আকাশ সব সময় সাদাটে। আর একটু দুরের জিনিস ই একদম চোখে আঙ্গুল দিয়ে ডিস্যাচুরেটেড।
৪। এনভায়রন মেন্ট কম্পোজিশানে ফোরগ্রাউন্ডে কিছু রাখা খুব জরুরি। এটা কম্পোজিশান ফ্রেম করতে যেমন কাজে দেয়, তেমনি ঐ ফোরগ্রাউন্ড কে রেফারেন্স ধরে বাকি জিনিস গুলোকে দূরে কাছে বুঝাতে সাহায্য করে। এই লার্নিং টা এখন ঢাকাতেও স্কেচবুকিং এ কাজে লাগাতে চেষ্টা করছি।
দার্জিলিং ভ্রমন এখানেই শেষ। বেশ ভাল লাগল ঘুরে এখানে। ট্যুরিস্টের চোখ দিয়ে দেখে সব হাসি খুশি লাগলেও লাইফ এখানে নিশ্চয় অনেক কষ্টের। সারা বছর হিম হিম শীত, ৪০ কিলো পাহাড়ি পথে প্রতিদিন উঠা নামা, রিফিউজি সেন্টারে আটকে পড়া মানুষ জন, ১২ মাস ট্যুরিজমের ভিড়, পাহাড়ের নানা রকম জটিলতা-ইত্যাদির মধ্যেও মানুষ জনের হাসি মাখা ব্যবহার ভাল লাগল।
শেষে আবার কোলকাতায় ব্যাক। কোলকাতা ঘুরতে গেলে খালি অঞ্জন দত্ত এর গুলো মনে পড়ে যায়-ধর্মতলার মোড়, ৩৬ চৌরংগী লেন, রডন স্ট্রিটের কালি ঝুলি মাখা বাড়ি। এমন কিছু গান যদি আমাদের থাকত। ( আছে কয় একটা অবশ্য-টিকাটুলি বাড্ডায় অলিগলি আড্ডায়)
Well done
উত্তরমুছুন