সন্ধ্যার সাথে দিন চক্রের একটা অদৃশ্য কানেকশন আছে। সন্ধ্যা মানেই পাখিদের ঘরে ফেরা, আকাশ লাল করে সূর্য ডোবা, সন্ধ্যা মানেই ছোটদের খেলার সময় শেষ, মসজিদে আজানের স্বর। সন্ধ্যা মানে ছিল অফিস শেষ করে হাটতে হাঁটতে বের হওয়া, রাস্তায় নুডলস, চিকেন এর দোকান এর পাশ দিয়ে যাবার সময় খুচরো খাওয়া দাওয়া, সন্ধ্যা মানে ছিল মোগলাই, জিলাপি, পুরিতে ধোঁয়া ওঠা কামড়।
কিংবা সন্ধ্যা মানে বাসের লাইনের ভিড়ে আমি দাঁড়িয়ে, কানে হেডফোনে রেডিওতে বাজতে থাকা শো, বাস না পেলে অচেনা বাইকারের পিছে সিট আকড়ে বসে থাকা, বায়ে প্লাস্টিক, ডানে এম্বুলেন্সের হিসেব কষে ফুটপাথ দিয়ে বাইক উঠিয়ে সময় বাচানো, ফ্লাইওভারে উঠে রাতের শহরের কাপা কাপা রাস্তা, মার্কেটের দোতলার চায়ের দোকান।
সন্ধ্যা ছিল পড়তে বসা, সন্ধ্যা ছিল কোচিং ছুটি, সন্ধ্যা ছিল চাদরাতে ঘুরতে বের হওয়া, সন্ধ্যা ছিল স্বাধীনতার প্রথম সিঁড়ি। সন্ধ্যা ছিল লেকের পাড়ে আড্ডা, স্কেচবুকে টুকিটাকি, মার্কেটে হাটা হাটী, শেষতক কফিশপে এক্সট্রা চিনির স্যাশেতে। সন্ধ্যা নিশ্চুপে প্রতিদিন এসে জানান দিয়ে গেছে একটা দিনের শেষ।
এখানে কি সন্ধ্যা হয়? ১৫ ঘন্টার দিনে কটকটে দিনের আলোতে অফিস ছুটির ঘন্টা বাজে, বিকেল পড়লে কফিশপে তালা ঝুলে, আলো পড়ে এলে শপিং মল বন্ধ। ঘড়ির সাথে দিনের আলো আর মিলাতে পারি না। বিকেলে না আমি হাঁটতে যাব? সন্ধ্যা হলে না পড়তে বসব? ফুটবল মাঠে দৌড়চ্ছি কিন্তু সন্ধ্যা হচ্ছে না। ঠান্ডা বাতাস কেটে যাচ্ছে কানের দুপাশ দিয়ে কিন্তু সূর্য ডুবছে না। আকাশ লাল হয়ে আসছে, ঘন্টার কাটা ঘুরছে-৭ টা, ৮ টা বেজে গেল-সন্ধ্যা হবে না? ফিরব না ঘরে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন